এক
অ্যামেরিকায় তেরো সংখ্যাটিকে অশুভ মনে করা হয়। একারণে অনেক বহুতল ভবনের ১৩তম তলাকে বলা হয় ১৪তম তলা । ১৩ তারিখের শুক্রবারকে বিশেষভাবে অশুভ বিবেচনা করা হয় এবং অনেক মানুষ এই দিনে ভ্রমণ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকেন। এদিনে কোনো অঘটন ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে এই দিনটিকেই দায়ী করা হয়।
অনেকেই ভাবতে পারেন, এই ব্যাপারটি শুধু সাধারণ লোকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ব্যাপারটি আসলে মোটেই তা নয়। যেমন : ১৯৭০ সালে চন্দ্রাভিযানে পাঠানো মহাকাশ যান অ্যাপোলো ১৩ অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। মহাকাশ যানটি পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তার ফ্লাইট কমান্ডার দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, তার আগেই বোঝা উচিত ছিল যে, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
তার এ মন্তব্যের কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটি উৎক্ষেপণ করা হয় শুক্রবার গ্রিনিচমান ১৩০০ ঘণ্টার সময়, সেদিনটি ছিল ১৩ তারিখ, আবার নভোযানটির নামও ছিল এ্যাপোলো ১৩।
বাইবেলে বর্ণিত যীশুখ্রিস্টের শেষ নৈশভোজ থেকেই এই বিশ্বাসের উৎপত্তি হয়েছে। এই নৈশভোজে যোগ দিয়েছিল ১৩ জন লোক। এই ১৩ জনের একজন হলো জুডাস, যে যীশুখ্রিস্টের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বলে মনে করা হয়।
কমপক্ষে, দুটি কারণে ১৩ তারিখের শুক্রবারকে বিশেষভাবে অশুভ মনে করা হয়। প্রথমত, এই শুক্রবারেই যীশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল বলে তাদের ধারণা। দ্বিতীয়ত, মধ্যযুগীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ডাইনীরা শুক্রবারেই তাদের সভা আয়োজন করে থাকে।
এই ধরনের বিশ্বাসের দ্বারা ভালো এবং মন্দ ঘটানোর ব্যাপারে আল্লাহর একচ্ছত্র ক্ষমতায় তাঁর সৃষ্টিকে অংশীদার করা হয়৷
২.
খ্রিস্টান ধর্মে কিছু ব্যক্তিকে কথিত সিদ্ধি লাভের কারণে অতিমাত্রায় ভক্তি ও প্রশংসা করার ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। তারা বিশ্বাস করে যে, এসব লোকেরা অলৌকিক ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা রাখে।
তাদেরকে সাধকের (Saint) মর্যাদা দেওয়া হয়। খ্রিস্টান ধর্মের পূর্বে হিন্দু এবং বৌদ্ধ রীতিতে যেসব আধ্যাত্মিক গুরুদেরকে উৎকর্ষের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেছেন বলে ভাবা হতো এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করা হতো, তাদেরকেও তাদের আধ্যাত্মিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন উপাধি দেওয়া হয়েছে, যেমন, গুরু, সাধু ও অবতার ইত্যাদি।
এসব উপাধি সাধারণ মানুষকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, তারা এসব গুরু, সাধকদেরকে স্রষ্টা ও মানুষের মাঝে সুপারিশকারী বানিয়ে নিয়েছে; এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেবতা হিসেবে তাদের পূজা করার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এ কারণে এসব ধর্মে সাধুসন্তদের কাছে সাধারণ মানুষ ভক্তিভরে প্রার্থনা করে থাকে। পক্ষান্তরে, ইসলাম স্বয়ং নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেরও মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করার বিরোধিতা করে। এ ব্যাপারে তিনি নিজেই বলে গেছেন, ‘আমার মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করো না, যেভাবে খ্রিস্টানরা ঈসা ইবনে মারইয়ামের ক্ষেত্রে করেছে। নিশ্চয়ই আমি কেবলই একজন বান্দা, তাই আমাকে বরং আল্লাহর বান্দা এবং রসূল বলেই ডেকো।’
৩.
পৃথিবীর সব ধর্মের লোকেরাই ‘উপরওয়ালা’ একজন আছে বলে কমবেশ বিশ্বাস করে। কিন্তু কী তাঁর নাম, কেমন তাঁর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য। কীভাবে তা জানা যাবে, তাঁকে জানা যাবে; কীভাবে তাঁকে মানতে হবে এখানেই যত দ্বন্দ্ব আর সংঘাত। উৎপত্তি ধর্মের নামে অনেক অধর্মের।
এ সংঘাতের পরিণতিতে খোদ ইসলাম ধর্মের অনুসারী দাবিদারদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে নানান মত। কিন্তু এটি এমন কোনো হাল্কা বিষয় নয় যে, যেকোনো একটি মত মেনে চললেই হলো; বরং এক্ষেত্রে সত্য একটিই এবং কেবল সেই একটি সত্যকেই মানতে হবে।
এ বিষয় নিয়েই গবেষক ও লেখক ড. বিলাল ফিলিপসের বই এক।
Shipping cost is based on weight. Just add products to your cart and use the Shipping Calculator to see the shipping price.
We want you to be 100% satisfied with your purchase. Items can be returned or exchanged within 30 days of delivery.
-
Estimated Delivery:Jan 10 - Jan 14